এ আর আহমেদ হোসাইন।।
কুমিল্লা দেবীদ্বারে যথাযোগ্য মর্যাদায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ও অমর শহীদ দিবস পালিত হয়েছে। রবিবার দিবাগত রাত ১২টা ০১ মিনিট থেকে শনিবার সকাল ১১টা পর্যন্ত উপজেলা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ভাষা শহীদদের স্মরনে পূষ্পার্ঘ অর্পণ ও আলোচনা সভার আয়োজন করেন উপজেলা প্রশাসন। মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, উপজেলা পরিষদ, পৌরসভা,আ’লীগ ও এর অঙ্গসংগঠন, ন্যাপ, সিপিবি,আ’লীগ উত্তর জেলা সাধারন সম্পাদক রোশন আলী মাষ্টার, উপজেলা পরিষদ’র উপ-নির্বাচনে আ’লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ও আ’লীগ কুমিল্লা (উ:) জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, দেবীদ্বার উপজেলা প্রেসক্লাব, বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, সামাজিক সংগঠন ও ব্যাক্তিবর্গ।
সরকারি, বে-সরকারী প্রতিষ্ঠান, সংগঠন, রাজনৈতিক দল, গনসংগঠন দিন ব্যাপী আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান সহ নানা কর্মসূচী পালন করেছে। সকাল সাড়ে সাত টায় অক্সফোর্ড ইন্টারন্যাশনাল স্কল এন্ড কজেল উপজেলা কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে ভাষা শহীদদের স্বরনে শ্রদ্ধা জানান এবং ১০টায় দেবীদ্বার ‘বিন-সালাম স্কুল এন্ড কলেজ’র উদ্যোগে আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও পুরস্কার বিতরনের আয়োজন করে।
বিন-সালাম স্কুল এন্ড কলেজ পরিচালনা পর্ষদ’র সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা গাজী বিন আব্দুস সালাম’র সভাপতিত্বে এবং বিদ্যালয়ের শিক্ষক সাহিদা ডলির সঞ্চালনায় উক্ত আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, সাংবাদিক এ,বি,এম আতিকুর রহমান বাশার, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, ইঞ্জিনিয়ার গাজী রাসেল বিন সালাম, জাফরগঞ্জ মীর আব্দুল গফুর কলেজ’র প্রভাষক মো. সাইফুল ইসলাম সামিম, বাংলাদেশ টেলিভিশন, মঞ্চ ও চলচিত্র অভিনেতা এ,এস,এম শহিদুল্লাহ মজুমদার (সবুজ), বিশিষ্ট আ’লীগ নেতা হাজী মোসলেহ উদ্দিন মানিক।
অন্যান্যের মধ্যে আলোচনায় অংশ নেন, দেবীদ্বার সুজাত আলী সরকারী কলেজ’র সাবেক জি.এস মকবুল হোসেন মুকুল, ইঞ্জিনিয়ার গাজী আসরিব বিন সালাম, সাংবাদিক এ,আর, আহমেদ হোসাইন, মো. শফিউল আলম রাজিব সরকার, বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মো.আসাদুজ্জামান সানি, মেদেী হাসান, মো. রাফি, সাদিয়া সুলতানা সাবা, ইশরাত জাহান লিজা প্রমূখ।
বক্তারা আরো বলেন, ১৯৪৭ সালে ধর্মীয় দ্বিজাতি তত্তে¡র ফলে সৃষ্টি হওয়া সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র পাকিস্তানের অস্তিত্ব রাষ্টভাষার প্রশ্নে ফাটল ধরে। ৫২’র ভাষা আন্দোলনে রফিক, সালাম, জব্বার, বরকত সহ অসংখ্য প্রাণের তপ্ত রক্ত দিয়ে আমরা আমাদের মায়ের ভাষা রক্ষাকরেছি। তারই ধারাবাহিকতায় ৭১’র-এ মুক্ত স্বাধীন বাংলাদেশ পেয়েছি। ১৯৯৯ সালে ২১ ফেব্রুয়ারীকে আন্তর্জাতিন মাতৃভায়া দিবস হিসেবে স্বীকৃতি আদায় করেছি। আজ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের পাশাপাশি আমাদের ভাষা আন্দোলন শহীদ দিবসের সংস্কৃতি রক্ষা করতে হবে। রাত ১২টা ০১ মিনিটে নয়, প্রভাত ফেরিতে আমরা নগ্নপদে, কালো ব্যাচ পড়ে, শহীদ মিনারে পূষ্পার্ঘ অর্পণ করব, বিভিন্ন গাছের ডাল পালায় বর্ণমালা প্রদর্শন করব। অফিস আদালত সহ সর্বস্তরে শুদ্ধভাষার চর্চা ও মাতৃভাষার গুরুত্ব দিতে হবে।
বক্তারা বলেন, একুশের চেতনা হউক সাম্প্রদায়িকতা রুখে দাড়াবার অঙ্গীকার। একুশ আমাদের আবেগ, ভালোবাসা, আত্মপরিচয়ে পরিচিত হওয়ার প্রেঢ়না। প্রতিটা জাতি তার মায়ের ভাষায় কথা বলার অধিকার রাখে। তাই আমাদের নিজ ভাষায় কথা বলার অধিকার রক্ষার পাশা-পাশি বিশ্বের সকল ভাষাভাসীদের স্ব স্ব মাতৃভাষায় কথা বলার অধিকার প্রতিষ্ঠায় কাজ করতে হবে। কারন সামরাজ্র বাদীদের দখল, শোষনে আজ পৃথিবী থেকে শত শত ভাষা হারিয়ে গেছে। বিভিন্ন জাতি-নৃগোষ্ঠী বা ক্ষুদ্র জাতিস্বত্তার মায়ের ভাষায় কথা বলার অধিকার সংরক্ষনে আত্মমর্যাদা প্রতিষ্ঠা করতে না পারলে আগামী ২০৫০ সালের মধ্যেই ২০০০ হাজার ভাষা হারিয়ে যাবে। আলোচনা শেষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বিজয়িদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।