সকালের কুমিল্লা ডেস্ক।।
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের লেখা ‘কাঠবেড়ালি! পেয়ারা তুমি খাও? গুড়-মুড়ি খাও? এই কবিতার উল্লেখিত কাঠবিড়ালিরা এখন শুধু এগুলাই খায় না, দিন দিন খেয়ে যাচ্ছে সাধারণ কৃষকদের স্বপ্নের ফসল।
কুমিল্লার বরুড়ায় গ্রামীণ ফলজ সম্পদ আম,কাঁঠাল, নারিকেল, পেঁপে ও পেয়ারা থেকে শুরু করে সবজিসহ বিভিন্ন ধরনের লাখ টাকার ফলজ সম্পদ খেয়ে নষ্ট করে ফেলছে প্রতি ৩০ সেকেন্ড সময়ে প্রায় ১০০/১৫০ ফুট লাফিয়ে বেড়ানো প্রাণি কাঠবিড়ালি (স্থানীয়ভাবে ছলা হিসেবে পরিচিত)।
সারাবছরই গ্রামীণ জনপদের কৃষকসহ বেশিরভাগ মানুষের পুষ্টিকর ফল খাওয়া ও বাড়তি ফলন বিক্রি করে প্রচুর টাকা আয় করার নিশ্চিত সুযোগ থাকার পরও তা বানচাল করে দিচ্ছে কাঠবিড়ালি।
গ্রামীণ অর্থনীতির আশানুরূপ উন্নয়নে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে ক্ষুদ্র এই প্রাণিটি।
কুমিল্লার বরুড়ায় প্রায় প্রতিটি ইউনিয়নেই কৃষক ও ফলজ বাগানের মালিকদের ছলা প্রতিরোধের স্থানীয় কোনো ব্যবস্থা না থাকায় অপূরণীয় এমন ক্ষতি নীরবে সহ্য করা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। উপজেলার অর্ধশতাধিক কৃষকসহ গ্রামে বসবাসকারী বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সাথে কথা বলে কাঠবিড়ালির বেপরোয়া এবং লাগামহীন ক্ষতিসাধনের কথা জানা গেছে।
কাঠবিড়ালির হাত থেকে ফলন রক্ষা করতে অনেকেই শব্দ বা ঘণ্টা বাজানোর মতো ফাঁদ ব্যবহার করছেন। প্রায় একযুগ ধরে কোনো ফাঁদই এখন কাজে আসছে না।
একসময় এ প্রাণীটি মানুষের আনাগোনা ভয় পেতো, ফলন খেয়ে ফেলতো দিনের বেলায়, এখন রাতদিন সমানে আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে ছলা বা কাঠবিড়ালি প্রাণিটি।
আগে বড়বড় ফল গাছ, যেমন একগাছ থেকে আরেক গাছে লাফিয়ে লাফিয়ে চলাচল করতো। এখন এরা অনেক বেশি আক্রমণাত্মক হয়ে উঠেছে। ছোট ছোট ফলজ গাছ ও ফাঁকা জায়গায় এমনকি মাটিতেও বিচরণ করে ঘরের আঙ্গিনার শখের লাগানো প্রিয় ফলজ গাছের উপরও মুহুর্তেই আক্রমণ করতে কুণ্ঠাবোধ করছে না বেপরোয়া হয়ে ওঠা এ ক্ষুদ্র প্রাণিটি।
অসময়ে উৎপাদন হয় এমন ধরনের মূল্যবান ফল-ফসল নির্বিচারে খেয়ে নষ্ট করছে কাঠবিড়ালি। এতে করে আর্থিকভাবে ব্যাপক লোকসানের মুখে পড়তে হচ্ছে ভুক্তভোগিদের।
এমতাবস্থা চলতে থাকলে মানুষের আহার করার মত কোনো ফল মূল না থাকার সম্বাবনা করছেন সাধারণ মানুষ।
এই বিষয়ে বরুড়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ নাসরিন সুলতানা তনু আমাদের জানান, কাঠবিড়ালি বনের সম্পদ। এই বিষয় বন বিভাগ দেখে।
এই বিষয়ে কুমিল্লার বন বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলি মুঠো ফোনে জানান, বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনে কাঠবিড়ালি নিধন করা নিষেধ। তবে কিভাবে এদের অত্যাচার কমানো যায় এই বিষয়ে আমরা উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।