আরিফ আজগর।।
কুমিল্লা সদর দক্ষিণে নিখোঁজ এর পর অর্ধগলিত শিশুর লাশ পাওয়া ঘটনায় ৪৮ ঘন্টার মধ্যে সৎ বাবাকে গ্রেফতার করেছে সদর দক্ষিণ মডেল থানা পুলিশ। বুধবার (২০ এপ্রিল) রাতে সদর মডেল দক্ষিণ থানাধীন মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতার সৎবাবা সেলিম ওরফে রুবেল (২৫) সদর দক্ষিণ থানার ধনাজোর গ্রামের মোঃ জলিল হক ওরফে ফজলু মিয়ার ছেলে।
পুলিশ জানায়, গত ১৭ এপ্রিল কুমিল্লার সদর দক্ষিণ মডেল থানাধীন ধনাজোর গ্রামের জলাশয় থেকে আরাফাত হোসেন বাপ্পী নামের ৭বছরের এক শিশুর মৃত ও অর্ধ গলিত উদ্ধার করে সদর দক্ষিণ মডেল থানা পুলিশ। এ ঘটনায় শিশু বাপ্পীর মামা আল আমিন বাদী হয়ে সদর দক্ষিণ মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় প্রধান আসামি করা হয় শিশু বাপ্পীর সৎ বাবা রুবেলকে।
মামলা দায়ের এর ৪৮ ঘন্টা না পার হতেই বুধবার রাতে সদর দক্ষিণ মডেল থানার ওসি তদন্ত বিল্লাল হোসেন এর নেতৃত্বে এসআই শাহীনূর ইসলাম এবং এএসআই দেলোয়ার হোসেন সঙ্গীয় ফোর্স গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে ঘাতক সৎ বাবা রুবেলকে গ্রেফতার করে।
প্রাথমিকভাবে জানা যায় আসামীর (রুবেল) নিজের ঔরসজাত নবজাতকের মাথায় সম্প্রতি শিশু বাপ্পি আঙ্গুল দিয়ে চাপ দিলে তিনি শিশু বাপ্পিকে চড় মারেন। এ নিয়ে রুবেল এর সৎ শাশুড়ি অথার্ৎ নিহত শিশু বাপ্পীর নানীর সাথে আসামীর বাদানুবাদ হয়। তখন সৎ বাবা রুবেল এর মনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। নিজের সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়েও তিনি চিন্তা করে পথের কাঁটা আরাফাত হোসেন বাপ্পীকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেওয়ার ফন্দি আঁটেন। যার ফল স্বরূপ গত ১৫ এপ্রিল সকাল ৯টায় বাপ্পীকে তার মামার বাড়ি সদর দক্ষিণ মডেল থানাধীন তারাপুর গ্রাম থেকে কৌশলে নিয়ে যায় এবং আসামী নিজের বাড়ির কাছাকাছি পাথারে (জলাশয়ে) নিয়ে গলায় একটি রশি দিয়ে পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে পানিতে ডুবিয়ে রাখেন।
ঘটনার পর থেকে নিখোঁজ শিশু বাপ্পীর নানা জালাল মিয়ার কান্নাকাটি দেখে নিজে সেই লাশ নিজ হাতে বের করে নানা জালাল মিয়া (আসামীর শ্বশুর) পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে।
ঘটনার পর গত ১৭ এপ্রিল থেকে আত্মগোপনে চলে যায় সৎ বাবা রুবেল। পরদিন ১৮ এপ্রিল নিহত শিশু বাপ্পীর মামা আল আমিন বাদী হয়ে সদর দক্ষিণ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
সদর দক্ষিণ মডেল থানার ওসি দেবাশীষ চৌধুরী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এ ঘটনায় ঘাতক সৎ বাবা রুবেলকে গ্রেফতার করে আদালতে তোলা হলে সে বিজ্ঞ আদালতে হত্যার বিষয়ে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিলে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।