সকালের কুমিল্লা ডেস্ক।।
কুমিল্লার দেবিদ্বারে স্কুলের ছাদে বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে মুজিবুর রহমান নামে একটি কিন্ডার গার্টেন স্কুলের প্রধান শিক্ষকের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে।
শনিবার (১৫ মে) দুপুরে জেলার দেবিদ্বার উপজেলার রাজামেহার বাজার সংলগ্ন রাজামেহার দুধ মিয়া সরকার মডেল একাডেমি ভবনের তিন তলার ছাদে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত মুজিবুর রহমান বরুড়া উপজেলা রহিমপুর গ্রামের মৃত আবদুল বারেক মিয়ার ছেলে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানায়, স্কুলের মালিক রাজামেহার গ্রামের বাসিন্দা মো. মুজিবুর রহমান সরকার তাঁর নির্মাণাধীন দ্বিতল ভবনের ছাদের চারপাশে ইট, টিন-কাঠ দিয়ে আলাদাভাবে শ্রেণিকক্ষ নির্মাণ করে ওই কক্ষেই এতদিন ঝুঁকিপূর্ণভাবে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করিয়ে আসছিলেন। ওই ভবনের নিচ তলা কয়েকটি দোকান এবং দ্বিতীয় তলায় একটি প্রাইভেট ব্যাংকের আউলেট শাখাসহ অন্যপাশে আবাসিক বাসিন্দারা বসবাস করে আসছেন।
কিন্তু তিনি ভবনের ছাদে আলাদাভাবে ইট গেঁথে ইটের ছিদ্র দিয়ে বিশেষ কায়দায় বিদ্যুৎ অফিসের অনুমতি ছাড়া বিদ্যুৎ সরবরাহের ফোর ফোরটি ভোল্টেজের শক্তিশালী বিদ্যুতের তার নিয়ে যান। এতদিন শিক্ষার্থীদের এমন ঝুঁকির মধ্যেই শ্রেণী কক্ষে পাঠদান করছিলেন।
প্রত্যাক্ষদর্শী ৫ম শ্রেণীর ছাত্র আবু সাঈদসহ আরও কয়েকজন ছাত্র জানান, দুপুরে আমরা স্কুলের ছাদে ক্লাস করছিলাম। পরে একটি বিকট শব্দ হয় আমরা শ্রেণি কক্ষ থেকে বের হয়ে দেখি মুজিব স্যার নিচে পড়ে আছেন। পরে অন্য শিক্ষকরা স্যারকে ধরাধরি করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা জানান, মুজিব স্যার স্কুলের তিন তলায় এসে শ্রেণি কক্ষ পরিদর্শন শেষে সিঁড়ি দিয়ে নিচে নামার সময় ফাঁকা ছাদে একটি রড পড়ে থাকতে দেখে তা নিচে নামানোর জন্য হাত দিয়ে উপরে তুললে ছাদের উপরে বিদ্যুতের তারে পৃষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান।
এ ব্যাপারে স্কুলের মালিক মো. মুজিবুর রহমান জানান, আমি লাঁশ নিয়ে স্যারের গ্রামের বাড়ি বরুড়া উপজেলার রহিমপুর যাচ্ছি। তিনি দীর্ঘ ১৮ বছর ধরে আমার প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন পদে চাকরি করেছেন সর্বশেষে তিনি স্কুলের প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছিলেন। দুপুরে তিনি স্কুলের ছাদে বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে মারা যান।
এ ব্যাপারে কুমিল্লা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর সহকারী প্রকৌশলী মো. নুর মোহাম্মদ বলেন, বিদ্যুৎ সরবরাহের ফোর ফোরটি এ লাইনটি গত ২০ বছর ধরে এখানে আছে। স্কুলের মালিক আমাদের না জানিয়ে বিশেষ কায়দা করে ছাদের ইটের ছিদ্রে চিকন পাইপের ভিতর দিয়ে তার নিয়ে গেছেন। যা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ ছিলো। গ্রাহক যদি ভবন নির্মাণের পূর্বে বিদ্যুৎ অফিসকে জানাতের তাহলে আমরা এ তারগুলো অন্যত্র সরিয়ে নিতাম।