সকালের কুমিল্লা ডেস্ক।।
কুমিল্লার মুরাদনগরে জুমার নামাজে খুতবায় মাইক ব্যবহার নিয়ে দুই পক্ষের বিরোধ জেরে একে অপরকে আসামি করে থানায় মামলা করলে ওই ঘটনায় দুই পক্ষের ৩ জনকে আটক করে থানা পুলিশ।
গতকাল শনিবার দিনভর দুই দফায় মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানাধীন বাঙ্গরা পশ্চিম ইউনিয়নে কুরন্ডী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মাদ্রাসা, ২টি বসতবাড়ি, দোকানপাট ও যানবাহনে হামলা- ভাংচুর নগদ টাকা লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
রোববার (২৮ আগস্ট) সকালে মো. ইউনুছ মিয়া বাদী হয়ে অভিযুক্ত ইউপি সদস্য সবুজ মিয়াকে প্রধান আসামী করে ২৪ জনের বিরুদ্ধে মুরাদনগর থানা মামলা দায়ের করেন অপর দিকে মো. আক্কাস আলী ২১ জনকে আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করলে মুরাদনগর থানা পুলিশ উভয়পক্ষের ৩ জনকে আটক করে।
মামলা ও স্থানীয় সূত্র জানা যায়, বিগত ইউপি নির্বাচনে সাবেক ইউপি সদস্য নূরুল ইসলাম ও নির্বাচিত সদস্য সবুজ মিয়ার মাঝে জয় পরাজয় নিয়ে দ্বন্দ্ব শুরু হয়।
নির্বাচনী প্রতিহিংসার জের ধরে ইউপি সদস্য সবুজ মিয়া গত কুরবানির ঈদের নামাজ ঈদগায়ে গিয়ে পরতে বাধা দেয় নূরুল ইসলামের পরিবারের লোকজনকে। তখন তারা ঈদের নামাজ মসজিদে আদায় করতে গেলে অত্র সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার শাহ জাহানের অনুমতি নিলেও সবুজ মিয়ার লোকজন মসজিদে তালা ঝুলিয়ে দেয়। পরে তার কোন উপায় না পেয়ে একই এলাকার কুরন্ডী ফুরকানিয়া মাদ্রাসায় ঈদের নামাজ আদায় করে নুরুল ইসলামের পরিবার।
তারপর থেকে সেখানেই জুম্মাসহ সকল প্রকার নামাজ আদায় করেন নূরুল ইসলামের পরিবার। মাদ্রাসা ও মসজিদ কাছাকাছি হওয়ায় গত ১৯ আগস্ট জুমার খুতবাকে কেন্দ্র করে আবারো দু’পক্ষের লোকজনের মধ্যে সৃষ্টি হয় উত্তেজনা। পরে বিষয়টি নিষ্পত্তির লক্ষে গত শুক্রবার (২৬ আগস্ট) রাতে দু’পক্ষের লোকজন নিয়ে বসেন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান বাহার খাঁন। সেখান থেকে ফেরার পথে দু’পক্ষের লোকজনের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।
তারই জের ধরে শনিবার সকাল ৭টা থেকে দিনভর দুই দফায় মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার শাহ জাহানের নেতৃত্বে ইউপি সদস্য সবুজ ও তার লোকজন নূরুল ইসলামের ভাই ইউনুছের বাড়ি, দোকান ও কুরন্ডী ফুরকানিয়া মাদ্রাসায় হামলা চালিয়ে ভাংচুর করে তার বসতবাড়ি থেকে ৫ লক্ষ টাকা নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার লুটপাট করেন বলে অভিযোগ করেন।
এসময় নূরুল ইসলামের পরিবার বাধা দেয়ার চেষ্টা করলে দেশিয় অস্ত্রের আঘাতে ১০ জন আহত হয়। আহতরা মুরাদনগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
স্থানীয় চেয়ারম্যান বাহার খান বলেন, নির্বাচন থেকেই দুই মেম্বারের মধ্যে মতবিরোধ চলছে। গতকাল বিকালে স্থানীয় ভাবে বসে সমাধান করতে পারিনি। আজ আমি এলাকায় নেই। শুনেছি তারা মারামারি করেছে।
এ বিষয়ে বাঙ্গরা বাজার থানার ওসি কামরুজ্জামান তালুকদার বলেন, খুতবার সময় মাইক ব্যবহার নিয়ে দুই পক্ষে মাঝে বিরোধ চলমান রয়েছে এ নিয়ে উভয়ের মধ্যে মারামারি হয়েছে। বর্তমানে ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন আছে।
মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আলাউদ্দিন ভূইয়া জনি বলেন,উভয়পক্ষের সাথে আমরা কথা বলেছি, ঘটনাটি এখন নিয়ন্ত্রণে আছে।