হালিম সৈকত, কুমিল্লা।।
গত শুক্রবার উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবর্ষ ২০০৩-০৪, ড. মোশাররফ হোসেন কলেজের দ্বিতীয় ব্যাচের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছিলো ড. মোশাররফ হোসেন কলেজ ক্যাম্পাস। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী সকাল ৯টা থেকেই প্রাক্তণ শিক্ষার্থীরা প্রবেশ করেছিল তাদের চির পরিচিত প্রিয় প্রাঙ্গণে, শিক্ষার্থীরা কলেজের মূল ফটকে অবস্থান করলেই অভ্যর্থনা জানানো হয়েছে গোলাপ রজনীগন্ধা ফুল আর চকলেট হাতে দিয়ে। বেলা বাড়ার সাথে সাথে কলেজের পুরো ক্যাম্পাস জুরে শুরু হয়েছিল হৈ-হুল্লোড় আর নিজেদের খেয়াল খুশিমতো ফটোশুট করার প্রতিযোগিতা। পুনর্মিলন আয়োজন সেতুবন্ধন -২০২২ এর লগো খচিত নীল রংয়ের টি-শার্ট পরিধান করে প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা হয়ে উঠে নীল প্রজাপতির দল। প্রজাপতির মতো উড়ে উড়ে কলেজ ক্যাম্পাসের প্রতিটি ভবন, বেলকনি, বাগান আর হল রুমের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্ত পুরোটা স্থানে ছিলো সকলের উৎসবমুখর বিচরণ। হেঁটে চলে, দাঁড়িয়ে বসে, যার যখন খুশি, যেমন খুশি একক, দলগত আবার দর্শক – অতিথি সবাই এক হয়ে চলে ফটোশেসন। দিনব্যাপী পুনর্মিলন আয়োজনের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছিল এক বর্ণাঢ্য আনন্দ শোভাযাত্রার মাধ্যমে। তারপর কলেজের সম্মানিত শিক্ষকদের উপস্থিতিতে হলরুমে প্রবেশ করে প্রাক্তন সকল শিক্ষার্থীরা, লক্ষ করা যায় পিনপতন নীরবতা। অনুষ্ঠানের সমন্বয়ক এম. এ. মামুন সরকার ও মো. শরীফুল ইসলামের সঞ্চালনায় পবিত্র কুরআন তেলওয়াত করেন প্রাক্তন শিক্ষার্থী সোহেল রানা। স্বাগত বক্তব্য রাখেন প্রধান সমন্বয়ক জহিরুল ইসলাম। প্রাক্তন সকল শিক্ষার্থীরা তাদের বর্তমান অবস্থান ও পরিচয় জানিয়ে একে একে স্মৃতিচারণ করেন। তাদের মধ্যে খন্দকার আরিফ হোসেন, অনু, আফজাল, ফরিদা, দিদার, আলমগীর, পলাশ, অপু, সুমন, সোহেল, রিয়াজ, তানিয়া, জনি, লতা ও আনিস কথা বলেন। আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে পরামর্শ ও দিকনির্দেশনা মূলক বক্তব্য রাখেন উক্ত কলেজের সহকারী অধ্যাপক মোঃ আবু সালেহ আপন, সিনিয়র প্রভাষক মো: মনিরুল ইসলাম,
প্রভাষক আঃ জলিল ভূইয়া, প্রভাষক হাবীবা রশিদ, নাসির হোসাইন।
উপস্থিত ছিলেন লাইব্রেরীয়ান বিল্লাল হোসেন। পবিত্র জুমার নামাজ শেষে সেতুবন্ধন- ২০২২ এর দ্বিতীয় পর্ব শুরু হয়েছিল মধ্যাহ্ন ভোজ পরিবেশনের মাধ্যমে। ফাঁকে ফাঁকে চলে রং চা পানের আয়োজনও । সম্মানিত অতিথি, শিক্ষক মহোদয়গন শুভেচ্ছা স্মারক মগ একে একে প্রাক্তন সকল শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেন। একইভাবে অনুষ্ঠানের আয়োজক শিক্ষার্থীরাও অভিভাবক তুল্য শিক্ষকদেরকে শুভেচ্ছা উপহার দিয়ে সম্মানিত করেন। অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী সকল শিক্ষার্থীরা পুনর্মিলন আয়োজকদেরকে ধন্যবাদ জানিয়ে বিশেষ শুভেচ্ছা স্মারক ফটোফ্রেম তুলে দেন জহির, মামুন, দিদার, সুমন, পলাশ ও শরীফের হাতে। অনুষ্ঠানের শেষ মুহুর্তে চলে র্যাফেল কুপন ড্র ও কেক কেটে ১ম পুনর্মিলন সেতুবন্ধন -২০২২ আয়োজন সমাপ্ত করার এক আনন্দঘন পর্ব। দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করেন প্রধান সমন্বয়ক জহিরুল ইসলাম, ভবিষ্যতে আরো বর্ণিল ও বড় পরিসরে পুনর্মিলন করার প্রত্যাশা জানিয়ে। বন্ধু, সতীর্থ কিংবা সহপাঠী, যে যা-ই সম্বোধন করুক না কেন, সবার মনের গহীনে জমেছিল রং বেরংয়ের নানা রকম স্মৃতি। মঞ্চে দাঁড়িয়ে প্রত্যেকেই স্মৃতিচারণ করেছেন শতভাগ আবেগ আপ্লুত হয়ে, ব্যক্ত করছেন তাদের মনের অব্যক্ত সব গল্প কথা আর স্মৃতি। কেউ কেউ আবার নিরব থেকেও জিজ্ঞাসু চোখে প্রকাশ করেছেন – ” আবার হবে তো দেখা, বন্ধু? এ দেখাই শেষ দেখা নয়তো?