সকালের কুমিল্লা ডেস্ক।।
কুমিল্লার দেবিদ্বারে একটি মাদরাসার ৫ম ও ৭ম শ্রেণির ১৩ ও ১৪ বছর বয়সী দুই শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগে প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক ও পরিচালক হাবিবুর রহমানকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
রোববার (১১ জুন) সকালে গ্রেফতার হাবিবুর রহমানকে আদালতে নিলে এ আদেশ দেন।
অভিযুক্ত হাবিবুর রহমান দেবীদ্বার পৌরসভা গুনাইঘর ইক্বরানগরী এলাকার ইউনুস খানের ছেলে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, অভিযুক্ত ধর্ষককে রোববার সকাল ১১টায় কুমিল্লার ৪ নম্বর আমলী আদালতে হাজির করা হয়। বিকেল ৩টায় বিচারক শারমিন রিমা তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এছাড়া ভুক্তভোগী দুই শিক্ষার্থীকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডাক্তারি পরীক্ষা শেষে আদালতে হাজির করা হলে, বিচারক ২২ ধারায় ভুক্তভোগীদের জবানবন্ধী রেকর্ড করেন।
মামলার বাদী ও মামলা সূত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী দুই শিক্ষার্থী একটি মাদরাসায় আবাসিক হোষ্টেলে থেকে লেখাপড়া করতো। তারা উভয়ে সম্পর্কে খালাতো বোন।
বৃহস্পতিবার (৮ জুন) রাত সাড়ে ৯টার দিকে ১ম ভুক্তভোগী ছদ্মনাম সুমিকে (১৪) হোস্টেলে গিয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক হাবিবুর রহমান ডেকে বাড়ি থেকে ফোন আসছে বলে মাদরাসার নিচতলার ক্লাসরুমে নিয়ে ধর্ষণ করেন। পরে ভুক্তভোগীকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন বলে তখন কাউকে জানায়নি। পরবর্তীতে ৯ জুন আনুমানিক ভোর ৪টায় অভিযুক্ত হাবিবুর রহমান মাদরাসার আবাসিক হোস্টেলে গিয়ে কলিংবেল চাপলে ২য় ভুক্তভোগী ছদ্মনাম রুমি (১৩) দরজা খুলে। তখন ভুক্তভোগীকে জানানো হয় তার বাড়িতে কেউ মারা গেছে, এই খবরে হোস্টেলের দায়িত্বে থাকা হালিমা ম্যাডামকে ভুক্তভোগী ডেকে বললে উনি প্রস্তুত হওয়ার জন্য বাইরে গেলে অভিযুক্ত শিক্ষক হোস্টেল রুমে প্রবেশ করে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে তার কামলালসা পূর্ণ করেন।
এ সময় হালিমা ম্যাডাম চলে আসলে সে দৌড়ে পালিয়ে যায়। সকালে ভুক্তভোগী রুমি মাদরাসা হতে পালিয়ে পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের পেছনে ভুক্তভোগীদের ভাড়া বাসায় এসে কান্না করতে থাকলে তার মায়ের জিজ্ঞাসাবাদে সে ঘটনার বিস্তারিত খুলে বলে। ওই ঘটনায় ২য় ভুক্তভোগী রুমির বাবা বাদী হয়ে ১০ জুন শনিবার বিকেলে দেবীদ্বার থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে হাবিবুর রহমানকে একমাত্র আসামি করে মামলা দায়ের করলে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ইক্বরানগরী বাসা থেকে শনিবার রাতেই তাকে গ্রেফতার করে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই রেজওয়ানুল ইসলাম রোববার সন্ধ্যায় বলেন, মামলার পর আসামি গ্রেফতার করে আজ কোর্টে তোলা হলে বিচারক কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন এবং ভুক্তভোগীদের মেডিকেল পরীক্ষা সম্পন্ন করে আদালতে ২২ ধারায় জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়েছে। আসামি ধর্ষণের দায় স্বীকার করেছেন।
দেবীদ্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কমল কৃষ্ণ ধর বলেন, আসামি গ্রেফতার পূর্বক কুমিল্লা কোর্ট হাজতে চালান করা হয়েছে। ভুক্তভোগীদের ডাক্তারি পরীক্ষা শেষে আদালতে জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়েছে।