আরিফ আজগর।।
কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার আড্ডা ইউনিয়নের বড়পুটিয়া গ্রামের মৃত আক্কাস আলীর ছেলে ইমাম হোসেন। তার বাবার মৃত্যুর আগে বেশ কিছু সম্পদ সাব কাওলা দলিল করে দিয়ে যান। সেই সম্পদ ভোগ করা নিয়ে নানান সমস্যার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন।
সম্প্রতি ইমাম হোসেনের বসতভিটার পাশে ২ শতক জায়গা নিয়ে পড়েন বিপাকে। ধনজয় আলাী নামের এক প্রতিবেশী দাবি করে বসেন এই জায়গা তাদের। ধনজন আলী হলেন ভুক্তভোগী ইমাম হোসেনের চাচাতো বোনের জামাই। ধনজন আলী ইমাম হোসেনের চাচাতো বোনকে বিয়ে করে ঘরজামাই থাকেন ওই বাড়িতে।
জায়গাটির তফসিলি চৌহদ্দি হলো, কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার বড় পুটিয়া মৌজার ২৪ নম্বর বিএস খতিয়ানভুক্ত ১১৬ দাগে বাড়ী, ৭ শতক আন্দরে দক্ষিণাংশের ২ শতক ভূমি। যার উত্তরে ভুক্তভোগী ইমাম হোসেন এবং দক্ষিণে ধনজন আলী।
ইমাম হোসেন তার বাবার কাছ থেকে এ জায়গা ওয়ারিশ সূত্রে পেলেও সেই জায়গা গত রমজান মাসে জোরপূর্বক ঘর তৈরি করতে যান অভিযুক্ত ধনজন আলী। পরে ইমাম হোসেনরা তা নিষেধ করতে গেলে ধনজন আলীর পরিবার চড়াও হয়ে, দা, কুড়াল নিয়ে মারতে আসেন ইমাম হোসেনদের। পরে উভয়পক্ষের মধ্যে ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ইমাম হোসেন স্থানীয় চেয়ারম্যান জাকির হোসেন বাদলের কাছে সুষ্ঠু বিচার চেয়ে লিখিত আবেদন করেন। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে বসে উভয়পক্ষের কথাবার্তা শুনে তাদের মিলিয়ে দেন। পরবর্তীতে ঈদের পরে চেয়ারম্যান কাগজপত্র দেখে এটার সমাধান করবেন বলে ১১ মে তারিখ দেন। কিন্তু অভিযুক্ত ধনজন আলী গত ৬ মে চেয়ারম্যানের দেওয়া তারিখকে তোয়াক্কা না করেই আবারও ঘর নির্মাণ কাজ শুরু করেন। এসময় ভুক্তভোগী ইমাম হোসেন চেয়ারম্যানের কাছে দৌড়ে গিয়ে ধনজন আলী ঘর নির্মাণ করছেন বলে জানালে চেয়ারম্যান ভুক্তভোগী ইমাম হোসেনকে বলেন আপনারা আইনের আশ্রয়ে যান। এর পরবর্তীতে গত ৮ মে ভুক্তভোগী ইমাম হোসেন বাদী হয়ে কুমিল্লার আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। আদালত দলিলপত্র বিবেচনা করে মামলাটি আমলে নিয়ে বরুড়া থানার ওসিকে তদন্তের নির্দেশ দেন। পাশাপাশি শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য বলেন। বরুড়া থানার এসআই মিজানুর রহমান গিয়ে অভিযুক্তদের কাজ বন্ধ রেখে আগামী ৬ জুন আদালতে থাকার জন্য নোটিশ প্রদান করে আসেন। কিন্তু সেসব নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে, ধনজন আলী আবারও ঘর নির্মাণ করে চলেছেন। ফলে যেকোনো সময় বড় সংঘাতের আশংকা রয়েছে।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী ইমাম হোসেন বলেন, আমার মালিকানা জায়গায় ধনজন আলী জোর করে ঘর তুলছেন। আমি আদালতের দ্বারস্থ হয়েছি। কিন্তু ধনজন আলী আদালতকে সে জায়গার দখল দেখাতে জোরপূর্বক ঘর তৈরি করছে। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই। আদালত আমার দলিলপত্র দেখে মামলাটি আমলে নিয়েছেন। আমি আদালতের উপর সম্পূর্ণ আস্থাশীল। আদালত যা সিদ্ধান্ত দেন আমি মেনে নেবো।
তবে জোর করে, আদালতের নির্দেশ অমান্য করে, থানা পুলিশের নোটিশের তোয়াক্কা না করেই ধনজন আলী কেন জোরপূর্বক ঘর নির্মাণ করছেন এ বিষয়ে অভিযুক্ত ধনজন আলী বা তার পরিবারের কারও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
১২নং আড্ডা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাকির হোসেন বাদলকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
বরুড়া থানার এসআই মিজানুর রহমান বলেন, কোর্ট থেকে নির্দেশ আসার পর আমি স্ব শরীরে গিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। অভিযুক্তদের ঘর নির্মাণ থেকে বিরত থাকার জন্য বলেছি। তারপরও তারা ঘর নির্মাণ করছেন, এটা আদালত অবমাননার সামিল। এটা আদালত অবশ্যই বিবেচনা করবেন।