সাকিব আল হেলাল।।
কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার ৩ নং উত্তর খোশবাস ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের নরসিংহপুর(ভূইয়া বাড়ি) গ্রামের মৃত. খালেকের প্রতিবন্ধী স্ত্রী ভূমি রেকর্ডের ভুলে বসত ভিটা থেকে বঞ্চিত হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, ১৯৮৩ সালে খালেকের পিতা চেরাগ আলী ইন্তেকাল করেন। তার মৃত্যুর সময় এক স্ত্রী দুই সংসারের ৪ ছেলে ও ৬ কন্যা সন্তান রেখে যান । এ সময় তিনি বিভিন্ন দাগে ৩২ শতাংশ বসতভিটা রেখে যান।
বাবার মৃত্যুর পর খালেক অসহায় হয়ে গিয়ে নোয়াখালীর বিভিন্ন এলিবায় দিনমজুরের কাজ করতেন। সে সময় তিনি অনেক বছর বাড়িতে আসতেন না। ১৯৯২ সালে যখন জমির রেকর্ড হয় তখন খালেক বাড়িতে ছিলেন না। এই সুযোগে খালেকের বড় ভাই সুলতানা আহমেদ খালেকের সম্পত্তি ও খালেকের দুই ভাই সিরাজুল ইসলাম এবং মহিউদ্দিনেরও আংশিক জমি তার স্ত্রী শ্যামলা বেগম ও ছেলে মাজিদুলের নামে রেকর্ড করে ফেলেন। কিছুদিন পরে খালেক বাড়িতে আসেন এসে বিয়ে করেন। বিয়ের কিছুদিন পর খালেকের স্ত্রী মারা যায়। পরে খালেক পার্শবর্তী খোশবাস গ্রামের এক প্রতিবন্ধী মেয়েকে বিয়ে করেন। তার দুটি সন্তান জন্ম হওয়ার পর খালেক ইন্তেকাল করেন। স্বামী মারা যাওয়ার পর বোবা নারী দুই ছেলেকে নিয়ে অসহায় অবস্থায় দিন যাপন করছেন। এরই মধ্যে খালেকের বড় ভাই সুলতান ও তার স্ত্রী শ্যামলা বেগমও ইন্তেকাল করেন। তার কিছুদিন যেতে না যেতেই খালেক এর ছেলে আলী আশরাফ হুজুর ও মাজেদুল রেকর্ডের জমি দখল করে বোবা মহিলাকে তা জায়গা থেকে উচ্ছেদ করে দেন। তারা বলেন তাদের রেকর্ডের জমি তারা কাগজ অনুযায়ী দখল দিয়েছেন এ জমি তাদের।
এই অবস্থায় বোবা এই নারী তার দুই ছেলে নিয়ে কোথায় দাঁড়াবেন ?
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর অভিযোগ দায়ের করেও কোন ফলাফল পাননি।
এই বিষয়ে তিন নং উত্তর খোসবাস ইউনিয়নের মহিলা মেম্বার কাউসারেন্নেছা বলেন, আমার বাবার ৪ ছেলে।সম্পতি ভাগ বন্টন হলে ৪ভাগ হবে। সুলতান ভাই একা নিবে কেন? আমি চাই সম্পতি ৪ ভাইয়ের মধ্যে সমানভাগে বন্টন হোক।
এ বিষয়ে দ্বিতীয় সংসারের ছোট ছেলে মহিউদ্দিন বলেন,সুলতান ভাই শুধু খালেকের সম্পতি রেকর্ড করেন নাই। আমার ও আমার আরেক ভাই সিরাজুলেরও আংশিক জমি রেকর্ড করে নিয়ে গেছে।আমি চাই বাবার সম্পত্তি সবার মাঝে সমানভাগে বন্টন হোক।
অভিযুক্ত বিবাদী আশরাফ হুজুর বলেন, আমরা কাগজ অনুযায়ী আমাদের জায়গা আমরা দখল করেছি। আমরা তো কাগজের বাইরে কিছু করি নাই।কাগজ অনুযায়ী বসেন আমরা ১০০% মানতে রাজি আছি।
স্থানীয় ইউপি মেম্বার শফিকুল ইসলাম বলেন, আমি অনেকবার চেষ্টা করেছি দুই পক্ষকে বসিয়ে সমাধান করার কিন্তু সুলতানের ছেলেরা মানতে রাজি না হওয়ায় বিষয়টি সমাধান করা সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে ৩ নং উত্তর খোসবাস ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নাজমুল হাসান সরদার বলেন, এটা আইনগত বিষয়। জমি আশরাফ হুজুরের বাবা ও মায়ের নামে রেকর্ড। চেষ্টা করেছি দুই পক্ষকে সমঝোতার মাধ্যমে সমাধান করার। যেহেতু এটা আইনগত বিষয় আমরা তাদেরকে চাপ সৃষ্টি করতে পারি না। তবে যদি বড় ভাইয়ের ছেলেরা আন্তরিক হয় তাহলে বোবা মহিলাটি তার বাসস্থান ফিরে পাবে।