মোঃ শাহআলম, বরুড়া।।
অসুস্থ ছেলেটাকে রাতের বেলায় একটি সরকারি হাসপাতালের ইমার্জেন্সিতে নিয়ে গেলাম। (সঙ্গত কারণে হাসপাতালের নাম প্রকাশ করছি না)। কর্তব্যরত মেডিকেল এ্যাসিসটেন্ট সমস্যা জানতে চাইলেন ও ডিউটিরত ডাক্তারকে ফোন করে আসতে বললেন। টেনশন নিয়ে বসে আছি। অনেক্ক্ষণ পরও তিনি আসলেননা।
মেডিকেল এ্যাসিসটেন্ট একটি প্যাডে কিছু ঔষধ লিখে দিলেন। তাঁকে বললাম ভাই আপনার প্রতি শ্রদ্ধা রেখে বলছি এই ব্যাপারে আপনাদের যথেষ্ট অভিজ্ঞতা আছে সেটা অস্বীকার করছি না। রাতের বেলা অসুস্থ ছেলেটাকে অনেক দূর থেকে কষ্ট করে নিয়ে এসেছি, যেহেতু ডাঃ সাহেব আছেন তাই মানসিক স্যাটিসফাইয়ের জন্য তাঁকে একটু দেখালে ভালো হতো।
একথা শোনে তিনি যেন আকাশ থেকে পড়লেন, যেন আমি মহা ভুল করে ফেলেছি।
অনেকটা বিরক্তির সুরে বললেন ডাক্তার সাহেব উপরে দুটো ওয়ার্ডে রোগী দেখছে, উনার আসতে এক দেড় ঘন্টা সময় লাগবে আপনি বসেন। পাশে বসে থাকা ঔষধ কোম্পানির মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভও তাঁর সাথে সুর মেলালেন।
কি আর করা বিশ মিনিট বসে আছি, সময় যেন যাচ্ছেনা। ভাবলাম উপরে ওয়ার্ডে গিয়ে দেখি কতজন রোগী দেখার বাকি রয়েছে, তিনি আসছে কেমন সময় লাগতে পারে।
উপরে গিয়ে দুটি ওয়ার্ডে তন্নতন্ন করে খু্ঁজলাম কিন্তু সেখানে এই মুহূর্তে কোন ডাক্তারই নেই।
যেহেতু তিনি উপরে নেই তাই নিশ্চিত হলাম মেডিকেল এসিস্ট্যান্ট আমার সাথে মিথ্যে বলেছে। নিচে নেমে এসে দেখলাম ডাক্তার সাহেবও এসেছেন। জানিনা মেডিকেল এসিস্ট্যান্ট আমি উপরে যাচ্ছি দেখে ডাক্তার সাহেবকে ফোন করে অভিহিত করেছিলেন কিনা?
অবশেষে তিনি ঔষধ লিখে দিয়ে চলে গেলেন। চলে আসার আগে তাঁকে (মেডিকেল এসিস্ট্যান্টকে) নিজের পরিচয় দিলাম, তিনি বললেন আরে ভাই আগে বলবেন না।
মনে মনে ভাবলাম সবাই তো মানুষ, সবারই সুখ-দুঃখ, সুবিধা-অসুবিধা থাকতে পারে। কিন্তু এভাবে তিনি মিথ্যার আশ্রয় না নিলেও তিনি পারতেন।